Duck hunt
HomeForumBlogAbout me

6:47:09 PM May 19 th 2024
Happy !! Sunday
* Asikur <p>আখেরী যামানায়
কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে
মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব
ঘটবে। দাজ্জালের আগমণ কিয়ামত
নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে বড়
আলামত। মানব জাতির জন্যে
দাজ্জালের চেয়ে অধিক বড় বিপদ
আর নেই। বিশেষ করে সে সময় যে
সমস্ত মুমিন জীবিত থাকবে
তাদের জন্য ঈমান নিয়ে টিকে
থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে।
সমস্ত নবীই আপন উম্মাতকে
দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন।
আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও
দাজ্জালের ফিতনা থেকে সতর্ক
করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে
বাঁচার উপায়ও বলে দিয়েছেন।
ইবনে উমার (রাঃ) নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেনঃ</p>

<p>“একদা নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাড়িয়ে
আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা
করলেন। অতঃপর দাজ্জালের
আলোচনা করতে গিয়ে বললেনঃ
আমি তোমাদেরকে তার ফিতনা
থেকে সাবধান করছি। সকল নবীই
তাদের উম্মাতকে দাজ্জালের ভয়
দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি
তোমাদের কাছে দাজ্জালের
একটি পরিচয়ের কথা বলব যা কোন
নবীই তাঁর উম্মাতকে বলেন নাই।
তা হলো দাজ্জাল অন্ধ হবে। আর
আমাদের মহান আল্লাহ অন্ধ নন’’।
নাওয়াস বিন সামআন (রাঃ)
বলেনঃ</p>

<p>“একদা রাসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকাল
বেলা আমাদের কাছে
দাজ্জালের বর্ণনা করলেন। তিনি
তার ফিতনাকে খুব বড় করে তুলে
ধরলেন। বর্ণনা শুনে আমরা মনে
করলাম নিকটস্থ খেজুরের
বাগানের পাশেই সে হয়ত
অবস্থান করছে। আমরা রাসূল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর নিকট থেকে চলে
গেলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা আবার
তাঁর কাছে গেলাম। এবার তিনি
আমাদের অবস্থা বুঝে জিজ্ঞেস
করলেনঃ তোমাদের কি হলো?
আমরা বললামঃ হে আল্লাহর
রাসূল! আপনি যেভাবে
দাজ্জালের আলোচনা করেছেন
তা শুনে আমরা ভাবলাম হতে
পারে সে খেজুরের বাগানের
ভিতরেই রয়েছে। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বললেনঃ দাজ্জাল
ছাড়া তোমাদের উপর আমার
আরো ভয় রয়েছে। আমি তোমাদের
মাঝে জীবিত থাকতেই যদি
দাজ্জাল আগমণ করে তাহলে
তোমাদেরকে ছাড়া আমি একাই
তার বিরুদ্ধে ঝগড়া করবো। আর
আমি চলে যাওয়ার পর যদি সে
আগমণ করে তাহলে প্রত্যেক
ব্যক্তিই নিজেকে হেফাযত করবে।
আর আমি চলে গেলে আল্লাহই
প্রতিটি মুসলিমকে হেফাযতকারী
হিসেবে যথেষ্ট’’।[25]</p>

<p>দাজ্জালের আগমণের সময়
মুসলমানদের অবস্থাঃ</p>

<p>দাজ্জালের আগমণের পূর্ব মুহূর্তে
মুসলমানদের অবস্থা খুব ভাল
থাকবে। তারা পৃথিবীতে
শক্তিশালী এবং বিজয়ী থাকবে।
সম্ভবতঃ এই শক্তির পতন ঘটানোর
জন্যই দাজ্জালের আবির্ভাব
ঘটবে।</p>

<p>দাজ্জালের পরিচয়ঃ</p>

<p>দাজ্জাল মানব জাতিরই একজন
হবে। মুসলমানদের কাছে তার
পরিচয় তুলে ধরার জন্যে এবং তার
ফিতনা থেকে তাদেরকে সতর্ক
করার জন্যে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার
পরিচয় বিস্তারিতভাবে বর্ণনা
করেছেন। মুমিন বান্দাগণ তাকে
দেখে সহজেই চিনতে পারবে
এবং তার ফিতনা থেকে
নিরাপদে থাকবে। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) তার যে সমস্ত পরিচয়
উল্লেখ করেছেন মুমিনগণ তা পূর্ণ
অবগত থাকবে। দাজ্জাল অন্যান্য
মানুষের তুলনায় স্বতন্ত্র
বৈশিষ্টের অধিকারী হবে।
জাহেল-মূর্খ ও হতভাগ্য ব্যতীত কেউ
দাজ্জালের ধোকায় পড়বেনা।</p>

<p>নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দাজ্জালকে স্বপ্নে
দেখে তার শারীরিক গঠনের
বর্ণনাও প্রদান করেছেন। তিনি
বলেনঃ দাজ্জাল হবে বৃহদাকার
একজন যুবক পুরুষ, শরীরের রং হবে
লাল, বেঁটে, মাথার চুল হবে
কোঁকড়া, কপাল হবে উঁচু, বক্ষ হবে
প্রশস্ত, চক্ষু হবে টেরা এবং আঙ্গুর
ফলের মত উঁচু।[26] দাজ্জাল নির্বংশ
হবে। তার কোন সন্তান
থাকবেনা’’।[27]</p>

<p>দাজ্জালের কোন্ চোখ কানা
থাকবে?</p>

<p>বিভিন্ন হাদীছে দাজ্জালের
চোখ অন্ধ হওয়ার কথা বর্ণিত
হয়েছে। কোন কোন হাদীছে বলা
হয়েছে দাজ্জাল অন্ধ হবে। কোন
হাদীছে আছে তার ডান চোখ অন্ধ
হবে। আবার কোন হাদীছে আছে
তার বাম চোখ হবে অন্ধ। মোটকথা
তার একটি চোখ দোষিত হবে। তবে
ডান চোখ অন্ধ হওয়ার হাদীছগুলো
বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত
হয়েছে।[28] মোটকথা দাজ্জালের
অন্যান্য লক্ষণগুলো কারো কাছে
অস্পষ্ট থেকে গেলেও অন্ধ হওয়ার
বিষয়টি কারো কাছে অস্পষ্ট
হবেনা।</p>

<p>দাজ্জালের দু’চোখের মাঝখানে
কাফের লেখা থাকবেঃ</p>

<p>তাছাড়া দাজ্জালকে চেনার
সবচেয়ে বড় আলামত হলো তার
কপালে কাফের ﻛﺎﻓﺮ )) লেখা
থাকবে।[29] অপর বর্ণনায় আছে তার
কপালে ( ﻙ ﻑ ﺭ ) এই তিনটি বর্ণ
লেখা থাকবে। প্রতিটি মুসলিম
ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে।[30] অপর
বর্ণনায় আছে শিক্ষিত-অশিক্ষত
সকল মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে
পারবে।[31] মোটকথা আল্লাহ
মু’মিনের জন্যে অন্তদৃষ্টি খোলে
দিবেন। ফলে সে দাজ্জালকে
দেখে সহজেই চিনতে পারবে।
যদিও ইতিপূর্বে সে ছিল
অশিক্ষিত। কাফের ও মুনাফেক
লোক তা দেখেও পড়তে
পারবেনা। যদিও সে ছিল
শিক্ষিত ও পড়ালেখা জানা
লোক। কারণ কাফের ও মুনাফেক
আল্লাহর অসংখ্য সুস্পষ্ট দলীল-
প্রমাণ দেখেও ঈমান আনয়ন
করেনি।[32]</p>

<p>দাজ্জালের ফিতনাসমূহ ও তার
অসারতাঃ</p>

<p>আদম সৃষ্টি থেকে কিয়ামত পর্যন্ত
মানব জাতির জন্য দাজ্জালের
চেয়ে বড় ফিতনা আর নেই। সে এমন
অলৌকিক বিষয় দেখাবে যা
দেখে মানুষ দিশেহারা হয়ে
পড়বে। দাজ্জাল নিজেকে প্রভু ও
আল্লাহ হিসেবে দাবী করবে।
তার দাবীর পক্ষে এমন কিছু
প্রমাণও উপস্থাপন করবে যে
সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগেই
সতর্ক করেছেন। মুমিন বান্দাগণ
এগুলো দেখে মিথ্যুক দাজ্জালকে
সহজেই চিনতে পারবে এবং
আল্লাহর প্রতি তাদের ঈমান আরো
বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু দুর্বল ঈমানদার
লোকেরা বিভ্রান্তিতে পড়ে
ঈমান হারা হবে।</p>

<p>দাজ্জাল নিজেকে রাব্ব বা প্রভু
হিসেবেও দাবী করবে।
ঈমানদারের কাছে এ দাবীটি
সুস্পষ্ট দিবালোকের মত মিথ্যা
বলে প্রকাশিত হবে। দাজ্জাল
তার দাবীর পক্ষে যত বড় অলৌকিক
ঘটনাই পেশ করুক না কেন মুমিন
ব্যক্তির কাছে এটি সুস্পষ্ট হবে যে
সে একজন অক্ষম মানুষ, পানাহার
করে, নিদ্রা যায়, পেশাব-
পায়খান করে। সর্বোপরি সে হবে
অন্ধ। যার ভিতরে মানবীয় সব দোষ-
গুণ বিদ্যমান সে কিভাবে রব্ব ও
আল্লাহ হতে পারে!! একজন
সত্যিকার মুমিনের মুমিনের
বিশ্বাস হলোঃ মহান আল্লাহ
সর্বপ্রকার মানবীয় দোষ-ত্রুটি হতে
সম্পূর্ণ মুক্ত। কোন সৃষ্টজীবই তার মত
নয়। আল্লাহকে দুনিয়ার জগতে
কোন মানুষের পক্ষে দেখাও সম্ভব
নয়।</p>

<p><strong> দাজ্জাল বর্তমানে কোথায়
আছে?</strong></p>

<p>ফাতেমা বিনতে কায়স (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি
মসজিদে গমণ করে নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর সাথে নামায আদায়
করলাম। আমি ছিলাম মহিলাদের
কাতারে। তিনি নামায শেষে
হাসতে হাসতে মিম্বারে উঠে
বসলেন। প্রথমেই তিনি বললেনঃ
প্রত্যেকেই যেন আপন আপন
জায়গায় বসে থাকে। অতঃপর
তিনি বললেনঃ তোমরা কি জান
আমি কেন তোমাদেরকে একত্রিত
করেছি? তাঁরা বললেনঃ আল্লাহ
এবং তাঁর রাসূলই ভাল জানেন।
অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি
তোমাদেরকে এ সংবাদ দেয়ার
জন্যে একত্রিত করেছি যে তামীম
দারী ছিল একজন খৃষ্টান লোক। সে
আমার কাছে আগমণ করে ইসলাম
গ্রহণ করেছে। অতঃপর সে মিথ্যুক
দাজ্জাল সম্পর্কে এমন ঘটনা
বলেছে যা আমি তোমাদের
কাছে বর্ণনা করতাম। লাখ্ম ও
জুযাাম গোত্রের ত্রিশ জন
লোকের সাথে সে সাগর পথে
ভ্রমণে গিয়েছিল। দুর্যোগপূর্ণ
আবহাওয়ার শিকার হয়ে এক মাস
পর্যন্ত তারা সাগরেই ছিল।
অবশেষে তারা সাগরের
মাঝখানে একটি দ্বীপে অবতরণ
করলো। দ্বীপের ভিতরে প্রবেশ
করে তারা মোটা মোটা এবং
প্রচুর চুল বিশিষ্ট একটি অদ্ভুত
প্রাণীর সন্ধান পেল। চুল দ্বারা
সমস্ত শরীর আবৃত থাকার কারণে
প্রাণীটির অগ্রপশ্চাৎ নির্ধারণ
করতে সক্ষম হলোনা। তারা বললঃ
অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি?
সে বললোঃ আমি সংবাদ
সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। তারা
বললোঃ কিসের সংবাদ
সংগ্রহকারী? অতঃপর প্রাণীটি
দ্বীপের মধ্যে একটি ঘরের দিকে
ইঙ্গিত করে বললোঃ হে লোক
সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে
অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও।
সে তোমাদের কাছ থেকে
সংবাদ সংগ্রহ করার জন্যে অধীর
আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তামীম
দারী বলেনঃ প্রাণীটি যখন
একজন লোকের কথা বললোঃ তখন
আমাদের ভয় হলো যে হতে পারে
সে একটি শয়তান। তথাপিও আমরা
ভীত হয়ে দ্রুত অগ্রসর হয়ে ঘরটির
ভিতরে প্রবেশ করলাম। সেখানে
প্রবেশ করে আমরা বৃহদাকার একটি
মানুষ দেখতে পেলাম। এত বড়
আকৃতির মানুষ আমরা ইতিপূর্বে আর
কখনও দেখিনি। তার হাত দু’টিকে
ঘাড়ের সাথে একত্রিত করে হাঁটু
এবং গোড়ালীর মধ্যবর্তী স্থানে
লোহার শিকল দ্বারা বেঁধে
রাখা হয়েছে। আমরা বললামঃ মরণ
হোক তোমার! কে তুমি? সে
বললোঃ তোমরা আমার কাছে
আসতে সক্ষম হয়েছ। তাই আগে
তোমাদের পরিচয় দাও। আমরা
বললামঃ আমরা একদল আরব মানুষ
নৌকায় আরোহন করলাম। সাগরের
প্রচন্ড ঢেউ আমাদেরকে নিয়ে
একমাস পর্যন্ত খেলা করলো।
অবশেষে তোমার দ্বীপে উঠতে
বাধ্য হলাম। দ্বীপে প্রবেশ করেই
প্রচুর পশম বিশিষ্ট এমন একটি জন্তুর
সাক্ষাৎ পেলাম, প্রচুর পশমের
কারণে যার অগ্রপশ্চাৎ চেনা
যাচ্ছিলনা। আমরা বললামঃ
অকল্যাণ হোক তোমার! কে তুমি?
সে বললোঃ আমি সংবাদ
সংগ্রহকারী গোয়েন্দা। আমরা
বললামঃ কিসের সংবাদ
সংগ্রহকারী? অতঃপর প্রাণীটি
দ্বীপের মধ্যে এই ঘরের দিকে
ইঙ্গিত করে বললোঃ হে লোক
সকল! তোমরা এই ঘরের ভিতরে
অবস্থানরত লোকটির কাছে যাও।
সে তোমাদের নিকট থেকে
সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য অধীর
আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাই
আমরা তার ভয়ে তোমার কাছে
দ্রুত আগমণ করলাম। হতে পার তুমি
একজন শয়তান- এভয় থেকেও আমরা
নিরাপদ নই। সে বললোঃ আমাকে
তোমরা ‘বাইসান’ সম্পর্কে সংবাদ
দাও। আমরা তাকে বললামঃ
বাইসানের কি সম্পর্কে জিজ্ঞেস
করছো? সে বললোঃ আমি
তথাকার খেজুরের বাগান সম্পর্কে
জিজ্ঞাসা করছি। সেখানের
গাছগুলো এখনও ফল দেয়? আমরা
বললামঃ হ্যাঁ। সে বললোঃ সে
দিন বেশী দূরে নয় যে দিন
গাছগুলোতে কোন ফল ধরবেনা।
অতঃপর সে বললোঃ আমাকে
বুহাইরাতুত্ তাবারীয়া সম্পর্কে
সংবাদ দাও। আমরা তাকে
বললামঃ বুহাইরাতুত্ তাবারীয়ার
কি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছো? সে
বললোঃ আমি জানতে চাই
সেখানে কি এখনও পানি আছে?
আমরা বললামঃ তথায় প্রচুর পানি
আছে। সে বললোঃ অচিরেই
তথাকার পানি শেষ হয়ে যাবে।
সে পুনরায় বললোঃ আমাকে যুগার
নামক ঝর্ণা সম্পর্কে সংবাদ দাও।
আমরা তাকে বললামঃ
সেখানকার কি সম্পর্কে তুমি
জানতে চাও? সে বললোঃ আমি
জানতে চাই সেখানে কি এখনও
পানি আছে? লোকেরা কি এখনও
সে পানি দিয়ে চাষাবাদ করছে?
আমরা বললামঃ তথায় প্রচুর পানি
রয়েছে। লোকেরা সে পানি
দিয়ে চাষাবাদ করছে। সে আবার
বললোঃ আমাকে উম্মীদের নবী
সম্পর্কে জানাও। আমরা বললামঃ
সে মক্কায় আগমণ করে বর্তমানে
মদীনায় হিজরত করেছে। সে
বললোঃ আরবরা কি তার সাথে
যুদ্ধ করেছে? বললামঃ হ্যাঁ। সে
বললোঃ ফলাফল কি হয়েছে?
আমরা তাকে সংবাদ দিলাম যে,
পার্শ্ববর্তী আরবদের উপর তিনি
জয়লাভ করেছেন। ফলে তারা তাঁর
আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছে।
সে বললঃ তাই না কি? আমরা
বললাম তাই। সে বললোঃ তার
আনুগত্য করাই তাদের জন্য ভাল। এখন
আমার কথা শুন। আমি হলাম
দাজ্জাল। অচিরেই আমাকে বের
হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আমি
বের হয়ে চল্লিশ দিনের ভিতরে
পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণ করবো।
তবে মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করা
আমার জন্য নিষিদ্ধ থাকবে। যখনই
আমি মক্কা বা মদীনায় প্রবেশ
করতে চাইবো তখনই ফেরেশতাগণ
কোষমুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে
আমাকে তাড়া করবে। মক্কা-
মদীনার প্রতিটি প্রবেশ পথে
ফেরেশতাগণ পাহারা দিবে।</p>

<p>হাদীছের বর্ণনাকারী ফাতেমা
বিনতে কায়েস বলেনঃ নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) হাতের লাঠি দিয়ে
মিম্বারে আঘাত করতে করতে
বললেনঃ এটাই মদীনা, এটাই
মদীনা, এটাই মদীনা। অর্থাৎ
এখানে দাজ্জাল আসতে
পারবেনা। অতঃপর নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) মানুষকে লক্ষ্য করে
বললেনঃ তামীম দারীর
হাদীছটি আমার কাছে খুবই ভাল
লেগেছে। তার বর্ণনা আমার
বর্ণনার অনুরূপ হয়েছে। বিশেষ করে
মক্কা ও মদীনা সম্পর্কে। শুনে
রাখো! সে আছে সাম দেশের
সাগরে (ভূমধ্য সাগরে) অথবা আরব
সাগরে। তা নয় সে আছে পূর্ব
দিকে। সে আছে পূর্ব দিকে। সে
আছে পূর্ব দিকে। এই বলে তিনি
পূর্ব দিকে ইঙ্গিত করে দেখালেন।
ফাতেমা বিনতে কায়েস
বলেনঃ “আমি এই হাদীছটি নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)এর নিকট থেকে মুখস্থ
করে রেখেছি’’।[33]</p>

<p>দাজ্জালের যে সমস্ত ক্ষমতা
দেখে মানুষ বিভ্রান্তিতে
পড়বেঃ</p>

<p>ক) একস্থান হতে অন্য স্থানে দ্রুত
পরিভ্রমণঃ
নাওয়াস বিন সামআন থেকে
বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে
দাজ্জালের চলার গতি সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করা হলে তিনি
বলেনঃ “দ্রুতগামী বাতাস
বৃষ্টিকে যেভাবে চালিয়ে নেয়
দাজ্জালের চলার গতিও সে রকম
হবে’’।[34] তিনি আরো সংবাদ
দিয়েছেন যে মক্কা ও মদীনা
ব্যতীত পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চল সে
পরিভ্রমণ করবে। মক্কা ও মদীনার
সমস্ত প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ
তলোওয়ার হাতে নিয়ে পাহারা
দিবে।</p>

<p>খ) দাজ্জালের সাথে থাকবে
জান্নাত-জাহান্নামঃ
দাজ্জালের সাথে জান্নাত এবং
জাহান্নাম থাকবে। প্রকৃত অবস্থা
হবে সম্পূর্ণ বিপরীত। দাজ্জালের
জাহান্নামের আগুন প্রকৃতপক্ষে
সুমিষ্ট পানি এবং জান্নাত হবে
জাহান্নামের আগুন। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ
“দাজ্জালের সাথে যা থাকবে
তা আমি অবগত আছি। তার সাথে
দু’টি নদী প্রবাহিত থাকবে।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর
পরিস্কার পানি দেখা যাবে।
অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন
জ্বলতে দেখা যাবে। যার সাথে
দাজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে
যেন দাজ্জালের আগুনে ঝাপ
দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে
পান করে। কারণ উহা সুমিষ্ট পানি।
তার চোখের উপরে মোটা আবরণ
থাকবে। কপালে কাফের লেখা
থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সকল
ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম
হবে’’।[35]</p>

<p>গ) দাজ্জাল মৃত ব্যক্তিকে জীবিত
করবেঃ
দাজ্জাল তার কর্মকান্ডে
শয়তানের সহযোগীতা নিবে।
শয়তান কেবল মিথ্যা ও গোমরাহী
এবং কুফরী কাজেই সাহায্য করে
থাকে। নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
দাজ্জাল মানুষের কাছে গিয়ে
বলবেঃ আমি যদি তোমার মৃত
পিতা-মাতাকে জীবিত করে
দেখাই তাহলে কি তুমি আমাকে
প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে
অবশ্যই মানব। এ সুযোগে শয়তান তার
পিতা-মাতার আকৃতি ধরে
সন্তানকে বলবেঃ হে সন্তান!
তুমি তার অনুসরণ কর। সে তোমার
প্রতিপালক’’।[36] হে আল্লাহ!
আমরা আপনার কাছে দাজ্জালের
ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই।</p>

<p>ঘ) জড় পদার্থ ও পশুরাও দাজ্জালের
ডাকে সাড়া দেবেঃ
দাজ্জালের ফিতনার মাধ্যমে
আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে
পরীক্ষা করবেন। দাজ্জাল
আকাশকে আদেশ দিবে বৃষ্টি বর্ষণ
করার জন্যে। আকাশ তার আদেশে
বৃষ্টি বর্ষণ করবে। যমিনকে ফসল
উৎপন্ন করতে বলবে। যমিন ফসল উৎপন্ন
করবে। চতুষ্পদ জন্তুকে ডাক দিলে
তারা দাজ্জালের ডাকে সাড়া
দিবে। ধ্বংস প্রাপ্ত ঘরবাড়িকে
তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের
করতে বলবে। নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
“দাজ্জাল এক জনসমাজে গিয়ে
মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের
আহবান জানাবে। এতে তারা
ঈমান আনবে। দাজ্জাল তাদের উপর
বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য আকাশকে
আদেশ দিবে। আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ
করবে, যমিন ফসল উৎপন্ন করবে এবং
তাদের পশুপাল ও চতুষ্পদ জন্তুগুলো
অধিক মোটা-তাজা হবে এবং
পূর্বের তুলনায় বেশী দুধ প্রদান
করবে। অতঃপর অন্য একটি
জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার
প্রতি ঈমান আনয়নের আহবান
জানাবে। লোকেরা তার কথা
প্রত্যাখ্যান করবে। দাজ্জাল
তাদের নিকট থেকে ব্যর্থ হয়ে
ফেরত আসবে। এতে তারা চরম
অভাবে পড়বে। তাদের ক্ষেত-
খামারে চরম ফসলহানি দেখা
দিবে। দাজ্জাল পরিত্যক্ত ভূমিকে
তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের
করতে বলবে। গুপ্তধনগুলো বের হয়ে
মৌমাছির দলের ন্যায় তার পিছে
পিছে চলতে থাকবে’’।[37]</p>

<p>ঙ) দাজ্জাল একজন মুমিন যুবককে
হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবেঃ</p>

<p>নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ দাজ্জাাল
বের হয়ে মদীনার দিকে অগ্রসর
হবে। যেহেতু মদীনায়
দাজ্জালের প্রবেশ নিষেধ তাই
সে মদীনার নিকটবর্র্তী একটি
স্থানে অবস্থান করবে। তার
কাছে একজন মুমিন লোক গমণ
করবেন। তিনি হবেন ঐ যামানার
সর্বোত্তম মুমিন। দাজ্জালকে
দেখে তিনি বলবেনঃ আমি
সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি সেই
দাজ্জাল যার সম্পর্কে রাসূল
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) আমাদেরকে সাবধান
করেছেন। তখন দাজ্জাল উপস্থিত
মানুষকে লক্ষ্য করে বলবেঃ আমি
যদি একে হত্যা করে জীবিত
করতে পারি তাহলে কি তোমরা
আমার ব্যাপারে কোন সন্দেহ
পোষণ করবে? লোকেরা বলবেঃ
না। অতঃপর সে উক্ত মুমিনকে
হত্যা করে পুনরায় জীবিত করবে। এ
পর্যায়ে যুবকটি বলবেঃ আল্লাহর
শপথ! তুমি যে মিথ্যুক দাজ্জাল- এ
সম্পর্কে আমার বিশ্বাস আগের
তুলনায় আরো মজবুত হলো। দাজ্জাল
তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা করার
চেষ্টা করবে। কিন্তু তাঁকে হত্যা
করতে সক্ষম হবেনা।[38] মুসলিম
শরীফের বর্ণনায় এসেছে উক্ত যুবক
দাজ্জালকে দেখে বলবেঃ হে
লোক সকল! এটি সেই দাজ্জাল যা
থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আমাদেরকে সাবধান করেছেন।
অতঃপর দাজ্জাল তার
অনুসারীদেরকে বলবেঃ একে ধর
এবং প্রহার কর। তাকে মেরে-
পিটে যখম করা হবে। অতঃপর
দাজ্জাল তাকে জিজ্ঞেস করবে
এখনও কি আমার প্রতি ঈমান
আনবেনা? নবী (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
উক্ত যুবক বলবেনঃ তুমি
মিথ্যাবাদী দাজ্জাল। তারপর
দাজ্জালের আদেশে তার মাথায়
করাত লাগিয়ে দ্বিখন্ডিত করে
ফেলবে। দাজ্জাল দু’খন্ডের মাঝ
দিয়ে হাঁটাহাঁটি করবে। অতঃপর
বলবেঃ উঠে দাড়াও। তিনি উঠে
দাড়াবেন। দাজ্জাল বলবে এখনও
ঈমান আনবেনা? তিনি বলবেনঃ
তুমি মিথ্যুক দাজ্জাল হওয়ার
ব্যাপারে এখন আমার বিশ্বাস
আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। অতঃপর
তিনি বলবেনঃ হে লোক সকল!
আমার পরে আর কারো সাথে এরূপ
করতে পারবেনা। অতঃপর
দাজ্জাল তাকে পাকড়াও করে
আবার যবেহ করার চেষ্টা করবে।
কিন্তু তার গলায় যবেহ করার
স্থানটি তামায় পরিণত হয়ে
যাবে। কাজেই সে যবেহ করতে
ব্যর্থ হবে। অতঃপর তাঁর হাতে-
পায়ে ধরে জাহান্নামে
নিক্ষেপ করবে। লোকেরা মনে
করবে তাকে জাহান্নামের
আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে। অথচ
সে জান্নাতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
নবী (সাঃ) বলেনঃ “এই ব্যক্তি
হবে পৃথিবীতে সেদিন সবচেয়ে
মহা সত্যের সাক্ষ্য দানকারী’’।[39]</p>

<p>দাজ্জাল কোথা থেকে বের
হবে?</p>

<p>দাজ্জাল বের হওয়ার স্থান
সম্পর্কেও রাসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্ণনা
দিয়েছেন। সে পূর্ব দিকের পারস্য
দেশ থেকে বের হবে। সে
স্থানটির নাম হবে খোরাসান।
সেখান থেকে বের হয়ে সমগ্র
দুনিয়া ভ্রমণ করবে। তবে মক্কা
এবং মদীনায় প্রবেশ করতে
পারবেনা। ফেরেশতাগণ সেদিন
মক্কা-মদীনার প্রবেশ পথসমূহে
তরবারি নিয়ে পাহারা দিবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ “পূর্বের কোন
একটি দেশ থেকে দাজ্জালের
আবির্ভাব ঘটবে যার বর্তমান নাম
খোরাসান’’।[40]</p>

<p>দাজ্জাল মক্কা ও মদীনায় প্রবেশ
করতে পারবেনাঃ</p>

<p>সহীহ হাদীছের বিবরণ অনুযায়ী
দাজ্জালের জন্যে মক্কা ও
মদীনাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ
থাকবে। মক্কা ও মদীনা ব্যতীত
পৃথিবীর সকল স্থানেই সে প্রবেশ
করবে। ফাতেমা বিনতে কায়েস
(রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত দাজ্জালের
হাদীছে এসেছে অতঃপর
দাজ্জাল বললোঃ আমি হলাম
দাজ্জাল। অচিরেই আমাকে বের
হওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। আমি
বের হয়ে চল্লিশ দিনের ভিতরে
পৃথিবীর সমস্ত দেশ ভ্রমণ করবো।
তবে মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করা
আমার জন্য নিষিদ্ধ থাকবে। যখনই
আমি মক্কা বা মদীনায় প্রবেশ
করতে চাইবো তখনই কোষমুক্ত
তলোয়ার হাতে নিয়ে
ফেরেশতাগণ আমাকে তাড়া
করবে। মক্কা-মদীনার প্রতিটি
প্রবেশ পথে ফেরেশতাগণ
পাহারা দিবে’’।[41] সে সময়
মদীনা শরীফ তিনবার কেঁপে
উঠবে এবং প্রত্যেক মুনাফেক এবং
কাফেরকে বের করে দিবে।
যারা দাজ্জালের নিকট যাবে
এবং তার ফিতনায় পড়বে তাদের
অধিকাংশই হবে মহিলা।
দাজ্জালের ফিতনা থেকে
বাঁচানোর জন্য পুরুষেরা তাদের
স্ত্রী, মা, বোন, কন্যা, ফুফু এবং
অন্যান্য স্বজন মহিলাদেরকে রশি
দিয়ে বেঁধে রাখবে।</p>

<p>দাজ্জাল পৃথিবীতে কত দিন
থাকবে?</p>

<p>সাহাবীগণ রাসূল (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে
জিজ্ঞেস করেছেন দাজ্জাল
পৃথিবীতে কত দিন অবস্থান করবে?
উত্তরে তিনি বলেছেনঃ সে
চল্লিশ দিন অবস্থান করবে। প্রথম
দিনটি হবে এক বছরের মত লম্বা।
দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের
মত। তৃতীয় দিনটি হবে এক
সপ্তাহের মত। আর বাকী দিনগুলো
দুনিয়ার স্বাভাবিক দিনের মতই
হবে। আমরা বললামঃ যে দিনটি
এক বছরের মত দীর্ঘ হবে সে দিন
কি এক দিনের নামাযই যথেষ্ট
হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ না;
বরং তোমরা অনুমান করে সময়
নির্ধারণ করে নামায পড়বে।</p>

<p>কারা দাজ্জালের অনুসরণ করবে?</p>

<p>দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারী
হবে ইহুদী, তুর্কী এবং অনারব
লোক। তাদের অধিকাংশই হবে
গ্রাম্য মূর্খ এবং মহিলা। ইহুদীরা
মিথ্যুক কানা দাজ্জালের
অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের
বিশ্বাস অনুযায়ী দাজ্জাল হবে
তাদের বাদশা। তার নেতৃত্বে
তারা বিশ্ব পরিচালনা করবে।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ দাজ্জালের
অধিকাংশ অনুসারী হবে ইহুদী
এবং মহিলা।[43] তিনি আরো
বলেনঃ “ইস্পাহানের সত্তর
হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ
করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে
সেলাই বিহীন চাদর’’।[44]
গ্রাম্য অশিক্ষিত লোকেরা
মূর্খতার কারণে এবং দাজ্জালের
পরিচয় সম্পর্কে তাদের জ্ঞান না
থাকার কারণে দাজ্জালের
অলৌকিক ক্ষমতা দেখে তারা
ফিতনায় পড়বে। মহিলাদের
ব্যাপারটিও অনুরূপ। তারা সহজেই
যে কোন জিনিষ দেখে প্রভাবিত
হয়ে থাকে।</p>

<p>দাজ্জালের ফিতনা থেকে
বাঁচার উপায়ঃ</p>

<p>নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দাজ্জালের ফিতনা
হতে রেহাই পাওয়ার উপায়ও বলে
দিয়েছেন। তিনি উম্মাতকে
একটি সুস্পষ্ট দ্বীনের উপর রেখে
গেছেন। সকল প্রকার কল্যাণের পথ
প্রদর্শন করেছেন এবং সকল
অকল্যাণের পথ হতে সতর্ক করেছেন।
উম্মাতের উপরে যেহেতু
দাজ্জালের ফিতনা সবচেয়ে বড়
তাই তিনি দাজ্জালের ফিতনা
থেকে কঠোরভাবে সাবধান
করেছেন এবং দাজ্জালের
লক্ষণগুলো সুস্পষ্ট করে বর্ণনা
করেছেন। যাতে মুমিন বান্দাদের
জন্য এই প্রতারক, ধোকাবাজ ও
মিথ্যুক দাজ্জালকে চিনতে
কোনরূপ অসুবিধা না হয়।</p>

<p>ইমাম সাফারায়েনী (রঃ)
বলেনঃ প্রতিটি বিজ্ঞ মুসলিমের
উচিৎ তার ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী-
পরিবার এবং সকল নারী-পুরুষদের
জন্য দাজ্জালের হাদীছগুলো
বর্ণনা করা। বিশেষ করে ফিতনায়
পরিপূর্ণ আমাদের বর্তমান
যামানায়। দাজ্জালের ফিতনা
থেকে বাঁচার উপায়গুলো
নিম্নরূপঃ–</p>

<p>১) ইসলামকে সঠিকভাবে
আঁকড়িয়ে ধরাঃ
ইসলামকে সঠিকভাবে আঁকড়িয়ে
ধরা এবং ঈমানের উপর অটল থাকাই
দাজ্জালের ফিতনা থেকে
বাঁচার একমাত্র উপায়। যে মুমিন
আল্লাহর নাম ও তাঁর অতুলনীয়
সুমহান গুণাবলী সম্পর্কে জ্ঞান
অর্জন করবে সে অতি সহজেই
দাজ্জালকে চিনতে পারবে। সে
দেখতে পাবে দাজ্জাল খায় পান
করে। মু’মিনের আকীদা এই যে,
আল্লাহ তা’আলা পানাহার ও
অন্যান্য মানবীয় দোষ-গুণ থেকে
সম্পূর্ণ পবিত্র। যে পানাহারের
প্রতি মুখাপেক্ষী সে কখনও
আল্লাহ বা রব্ব হতে পারেনা।
দাজ্জাল হবে অন্ধ। আল্লাহ এরূপ
দোষ-ত্রুটির অনেক উর্ধে। আল্লাহর
গুণাবলী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার
অধিকারী মুমিনগণের মনে প্রশ্ন
জাগবে যে নিজের দোষ থেকে
মুক্ত হতে পারেনা সে কিভাবে
প্রভু হতে পারে? মু’মিনের আকীদা
এই যে, আল্লাহকে দুনীয়ার
জীবনে দেখা সম্ভব নয়। অথচ মিথ্যুক
দাজ্জালকে মুমিন-কাফের সবাই
দুনিয়াতে দেখতে পাবে।</p>

<p>২) দাজ্জালের ফিতনা থেকে
আশ্রয় প্রার্থনা করাঃ
আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ “আমি
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম)কে নামাযের ভিতরে
দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয়
চাইতে শুনেছি’’।[45] তিনি
নামাযের শেষ তাশাহুদে
বলতেনঃ</p>

<p>ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧِّﻲ ﺃَﻋُﻮﺫُ ﺑِﻚَ ﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟْﻘَﺒْﺮِ ﻭَﻣِﻦْ ﻋَﺬَﺍﺏِ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ
ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺤْﻴَﺎ ﻭَﺍﻟْﻤَﻤَﺎﺕِ ﻭَﻣِﻦْ ﻓِﺘْﻨَﺔِ ﺍﻟْﻤَﺴِﻴﺢِ
ﺍﻟﺪَّﺟَّﺎﻝِ
“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে
কবরের আযাব, জাহান্নামের
আযাব, জীবন-মরণের ফিতনা এবং
মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা
থেকে আশ্রয় চাই’’।[46]</p>

<p>৩) দাজ্জাল থেকে দূরে থাকাঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দাজ্জালের নিকট
যেতে নিষেধ করেছেন। কারণ
সে এমন একজন লোকের কাছে
আসবে, যে নিজেকে ঈমানদার
মনে করবে। দাজ্জালের কাজ-কর্ম
দেখে সে বিভ্রান্তিতে পড়ে
ঈমান হারা হয়ে যাবে। মুমিনের
জন্য উত্তম হলো সম্ভব হলে সে সময়ে
মদীনা অথবা মক্কায় বসবাস করার
চেষ্টা করা। কারণ দাজ্জাল তথায়
প্রবেশ করতে পারবেনা। নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি
দাজ্জাল বের হওয়ার কথা শুনবে
সে যেন তার কাছে না যায়।
আল্লাহর শপথ! এমন একজন লোক
দাজ্জালের নিকটে যাবে যে
নিজেকে ঈমানদার মনে করবে।
অতঃপর সে দাজ্জালের সাথে
প্রেরিত সন্দেহময় জিনিষগুলো ও
তার কাজ-কর্ম দেখে
বিভ্রান্তিতে পড়ে ঈমান হারা
হয়ে তার অনুসারী হয়ে যাবে। হে
আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে
দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয়
চাই।</p>

<p>৪) সূরা কাহাফ পাঠ করাঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) দাজ্জালের ফিতনার
সম্মুখিন হলে মুমিনদেরকে সূরা
কাহাফ মুখস্থ করতে এবং তা পাঠ
করতে আদেশ করেছেন। তিনি
বলেনঃ “যে ব্যক্তি সূরা
কাহাফের প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ
করবে সে দাজ্জালের ফিতনা
হতে হেফাযতে থাকবে’’।[47]</p>

<p>সূরা কাহাফ পাঠের নির্দেশ
সম্ভবতঃ এজন্য হতে পারে যে, এই
সূরায় আল্লাহ তা’আলা বিস্ময়কর বড়
বড় কয়েকটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
মুমিন ব্যক্তি এগুলো গভীরভাবে
পাঠ করলে দাজ্জালের বিস্ময়কর
ঘটনা দেখে কিছুতেই বিচলিত
হবেনা। এতে সে হতাশ হয়ে
বিভ্রান্তিতেও পড়বেনা।</p>

<p>দাজ্জালের শেষ পরিণতিঃ</p>

<p>সহীহ হাদীছের বিবরণ অনুযায়ী
ঈসা ইবনে মারইয়াম (আঃ)এর
হাতে দাজ্জাল নিহত হবে।
বিস্তারিত বিবরণ এই যে, মক্কা-
মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর সকল
দেশেই সে প্রবেশ করবে। তার
অনুসারীর সংখ্যা হবে প্রচুর। সমগ্র
দুনিয়ায় তার ফিতনা ছড়িয়ে
পড়বে। সামান্য সংখ্যক মুমিনই তার
ফিতনা থেকে রেহাই পাবে।
ঠিক সে সময় দামেস্ক শহরের পূর্ব
প্রান্তে অবস্থিত এক মসজিদের
সাদা মিনারের উপর ঈসা (আঃ)
আকাশ থেকে অবতরণ করবেন।
মুসলমানগণ তার পার্শ্বে একত্রিত
হবে। তাদেরকে সাথে নিয়ে
তিনি দাজ্জালের দিকে রওনা
দিবেন। দাজ্জাল সে সময় বায়তুল
মাকদিসের দিকে অগ্রসর হতে
থাকবে। অতঃপর ঈসা (আঃ)
ফিলিস্তীনের লুদ্দ শহরের গেইটে
দাজ্জালকে পাকড়াও করবেন।
ঈসা (আঃ)কে দেখে সে
পানিতে লবন গলার ন্যায় গলতে শুরু
করবে। ঈসা (আঃ) তাকে লক্ষ্য করে
বলবেনঃ “তোমাকে আমি একটি
আঘাত করবো যা থেকে তুমি কখনও
রেহাই পাবেনা।মুমিন ঈসা (আঃ)
তাকে বর্শা দিয়ে আঘাত করবেন।
অতঃপর মুসলমানেরা তাঁর
নেতৃত্বে ইহুদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
করবে। মুসলমানদের হাতে
দাজ্জালের বাহিনী ইহুদীর দল
পরাজিত হবে। তারা কোথাও
পালাবার স্থান পাবেনা।
গাছের আড়ালে পালানোর
চেষ্টা করলে গাছ বলবেঃ হে
মুসলিম! আসো, আমার পিছনে একজন
ইহুদী লকিয়ে আছে। আসো এবং
তাকে হত্যা কর। পাথর বা
দেয়ালের পিছনে পলায়ন করলে
পাথর বা দেয়াল বলবেঃ হে
মুসলিম! আমার পিছনে একজন ইহুদী
লুকিয়ে আছে, আসো! তাকে হত্যা
কর। তবে গারকাদ নামক গাছ
ইহুদীদেরকে গোপন করার চেষ্টা
করবে। কেননা সেটি ইহুদীদের বৃক্ষ
বলে পরিচিত।[48]</p>

<p>সহীহ মুসলিম শরীফে আবু হুরায়রা
(রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) বলেনঃ</p>

<p>“ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা
যতক্ষণ না মুসলমানেরা ইহুদীদের
সাথে যুদ্ধ করবে। অতঃপর
মুসলমানগণ ইহুদীরকে হত্যা করবে।
ইহুদীরা গাছ ও পাথরের আড়ালে
পালাতে চেষ্টা করবে। কিন্তু
কেউ তাদেরকে আশ্রয় দিবেনা।
গাছ বা পাথর বলবেঃ হে মুসলমান!
হে আল্লাহর বান্দা! আমার
পিছনে একজন ইহুদী লুকিয়ে আছে।
আসো এবং তাকে হত্যা করো।
তবে ‘গারকাদ’ নামক গাছের
পিছনে লুকালে গারকাদ গাছ
কোন কথা বলবেনা। এটি ইহুদীদের
গাছ বলে পরিচিত’’।</p>

<p>অনুবাদ সুত্র –</p>

<p>[1] -তিরমিজী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[2] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[3] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[4] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[5] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[6] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[7] – সহীহ মুসলিম, শরহুন্ নববীর
সাথে (১৮/৬১)।
[8] – – ফাতহুল বারী, (১৩/১০০)।
[9] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[10]- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[11]- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।|
[12] – সহীহুল জামে আস্-সাগীর,
হাদীছ নং-৭৭৫২
[13]- মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[14]- বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[15] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[16] – তিরমিজী, অধ্যায়ঃ
কিতাবুল ফিতান, সহীহুল জামে
আস্-সাগীর, হাদীছ নং-৩৩৯৮।
নিশাপুর, হিরাত, মরো, বালখ এবং
পার্শ্ববর্তী কতিপয় অঞ্চলের নাম
খোরাসান।
[17] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[18] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[19] – মুসনাদে ইমাম আহমাদ। আহমাদ
শাকের সহীহ বলেছেন।
[20] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[21] – বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।
[22]- বুখারী, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
জানায়েয।
[23] – মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল
ফিতান।[/quote]</p>
2016-10-03 10:42 · (0)
নিজের নামে সাইট বানাতে এখানে ক্লিক করুন
★ Home ★ User Rights
★ About Us ★ Privacy Policy
★ Contact Us ★ Faq
★ Terms ★ Copyright
Go To Top