HomeForumBlogAbout me

8:32:28 PM May 18 th 2024
Happy !! Saturday
Notice Board

সম্মানিত অতিথি বৃন্দ আমার সাইট ভিজিটোর হিসেবে আসার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Guest of honor at my site as an observer to the multitude. Thanks for coming.
Notice History


★ Download Category ★
★ Pictures★ Music
★ Ringtone ★ Videos
★ Themes★ Software
★ Games★ Animation
★ Apps★ Criket Live
★ Last Update ★

দুষ্টু বউ

img

-মিশু হোমওয়ার্ক দেখাও?
-মোবাইলে গেমস খেলছে।
-এই মিশু হোমওয়ার্ক দেখাতে বলেছি
না তোমাকে।
-জ্বি দুলাভাই হোমওয়ার্ক তো করি
নাই।
-হোমওয়ার্ক কর নাই মানে?আর এই থাম
থাম তুমি আমাকে কি বলে ডাকলে?
-জ্বি দুলাভাই ডেকেছি।
-ফাজলামি করছ তোমার আম্মুকে কিন্তু
নোটিশ করতে বাধ্য হব।
-আমি কিছু জানিনা দুলাভাই আপু
বলেছে এ নামে ডাকতে।
-কিইই কই তোমার আপু?
-ওইতো ওর রুমে বসে টিভি দেখছে।
-পরে দেখছি ওকে।আর কখনও যেন এই
নামে না ডাক বুঝেছ।
-জ্বি আচ্ছা দুলাভাই।
-কি বললে?
-স্যরি স্যার ভাইয়া।
-ফাজিল ছেলে।এখন বল হোমওয়ার্ক কর
নাই কেন?
-আপুই তো করতে দিলনা বলল এত
হোমওয়ার্ক করে কি হবে তুই খেলতে
যা আমি তোর স্যারকে বলে দিব।
-তোমার আপু বলল অমনি তুমি দৌড়ানি
দিলে।
-আমার তো খেলতে ইচ্ছে করে না কি।
(মুখ কাঁচু মাঁচু করে বলল)
-তাহলে এখন শাস্তিস্বরূপ কান ধরে
দাড়িয়ে দেই?
-মাথা নিচু করল।
-কাল থেকে যেন সব হোমওয়ার্ক রেডি
দেখতে পাই।
-জ্বি আচ্ছা।
-এখন পড়া শুরু কর।
-জ্বি।
এই যে যেমন ফাজিল বোন তেমনি তার
ভাই।কোন অশুভক্ষনে যে এই মেয়েটার
প্রতি আমার আব্বু দুর্বল হয়ে পড়েছিল
পৃথিবীতে নাকি এমন ছেলেবউ আর
খুঁজে পাওয়া যাবেনা।জীবনে
প্রেমের অধ্যায়টা বাদ দিলাম ঐ একটা
কারনে মেয়েদের প্যানপ্যানানি
ফাজলামি সহ্য হয় না। কিন্তু আমার আব্বু
বউমা ঠিক করে রেখেছেন।পাশের
ফ্লাটে ওরা থাকে।ও হ্যা ফাজিল
মেয়েটার নাম মায়া।পৃথিবীতে ওরকম
ফাজিল দ্বিতীয়টিও জন্মায়নি।কি
জানি কি দেখল আব্বু মেয়েটার ভিতর
উনার মতে ভীষন লক্ষী মেয়ে। লক্ষী
না ছাই সারাক্ষন শুধু দুষ্টুমি।আমার আব্বু
আর ওর আব্বু একই জায়গায় জব করে।
সেখান থেকে পরিচয়। তারপর আব্বু
একদিন ওদের বাসায় গিয়ে মায়াকে
দেখে পুত্রবধু হিসেবে পছন্দ করে
ফেলে।আর সেখান থেকেই শুরু হল আমার
পরাধীন জীবন।মেয়েটা আম্মুর ফোন
থেকে আমার নাম্বার নিয়ে সারাক্ষন
শুধু জ্বালায়।কয়েকদিন আগে হঠাৎ
রাস্তায় দেখা।বলে কিনা আমি
নাকি ওকে দেখে লজ্জা পাই কেন
মাথা নিচু করি কেন।সেদিন ফুসকা
খেয়ে আমার মানিব্যাগের অবস্থা
দুর্দশাময় করেছিল।এরপর আসল আব্দার
একেবার আমার আব্বুর কাছে আকুল
আবেদন।প্রাইভেট টিউটরের নাকি
অভাব তাই উনার ভাইকে আমাকে
পড়াতে হবে। আব্বুর আদেষে বাধ্য হয়ে
আসতে হয়।কিন্তু এখন বুঝছি টিউটরের
কেন অভাব এমন ফাজিল স্টুডেন্ট কে
পড়াবে কার আছে ধৈর্য।সারাক্ষন
মোবাইল আর ক্রিকেট নিয়ে পড়ে
থাকে।যতটুকু ধমক দিয়ে পড়ানোর
চেষ্টা করি মায়ার কারনে সেটুকুও
সম্ভব হয়না।যখন যা ইচ্ছা তাই করে।
পড়াতে বসলে একটু পরে মায়া এসে
বলে ভাই তোর ছুটি। ছুটি বলতে দেরি
আছে মিশুর বাসা থেকে বেরোতে
দেরি নেই।একের পর এক ঝামেলা
করেই চলেছে দুই ভাইবোন।এরকম করলে
রেজাল্টে ডাব্বা মেরে আমার মান
সম্মান তো আলু পটলের দামে উঠবে।
বিয়ের এখনো অনেক দেরি অথচ
মিশুকে বলে দিয়েছে দুলাভাই
ডাকতে এমন ফাজিল মেয়েকে কি
করা উচিৎ।মিশুকে পড়া দেখিয়ে
দিয়ে উঠে পড়লাম মায়ার ঘরের
দিকে।
-আরে স্যার যে কখন আসলেন?
-এইতো মাত্র আসলাম।কি করছ?
-এইতো টম এ্যন্ড জেরি দেখছি
দেখবেন?
-নাহ তুমি দেখ?
-স্যার আঁচার খাবেন আম্মু নিজে
হাতে বানিয়েছে।
-নাহ তুমি খাও।
-স্যার বসেন এখানে।
-এখানে মানে?
-আমার পাশে।
-চুপ।
-কি হল?(খাওয়া থামিয়ে দিয়ে হা
করে তাকিয়ে আছে)
-মিশুকে কি সব শিখিয়ে দিয়েছ?
-কই কিছু না তো।কেন কিছু হয়েছে?
-সত্যি তো।
-হ্যা। কিছু হয়েছে কি?
-নাহ কিছুনা।
-আপনি কিছু লুকিয়ে যাচ্ছেন না তো।
-ফাজিল মেয়ে নিজে শিখিয়ে
দিয়ে এখন চেপে যাচ্ছে।(বিড়বিড়
করে বললাম)
-কি হল?
-কিছুনা।ভবিষ্যতে যেন এরকম না হয়
আমি কিন্তু তোমার আম্মুকে বলতে
বাধ্য হব।
-কি করলাম আমি হু..আর কি বলবেন
আম্মুকে শুনি?
-বলব যে আপনার মেয়ে আমাকে....
-আমি আপনাকে কি?
-এত কথা বল কেন যাও একগ্লাস পানি
নিয়ে এস।
-যাচ্ছি তো।
কিছুক্ষন পর...
-এই যে আপনার পানি।
-একগ্লাস পানি আনতে এতসময় লাগে?
-ফ্রিজে ঠান্ডা পানি ছিলনা তাই
ঠান্ডা করে আনতে গিয়ে লেট হল।
-তোমার কাছে কেউ ঠান্ডা পানি
চেয়েছে?
-তাহলে কি গরম পানি দিব?
-এত বেশি বুঝ কেন চুপ থাক।
-ওকে চুপ।এই আমি কি যেন একটু
খাইতেছিলাম ঠিক মনে করতে
পারছিনা বলুন তো কি?
-আমার মাথা চিবাইতেছিলা না
তুমি।
-এমন ভাবে বলছেন কেন।মনে করিয়ে
তো দিতে পারেন।
-উফফ যন্ত্রনা থাক তুমি।
-কোথায় যাচ্ছেন?
-মিশুর কাছে।
-মিশু তো নেই।
-নেই মানে?কোথায় গেছে?
-এই তো আমি যখন আপনার জন্য পানি
আনতে গেলাম তখন বলল আপু খেলতে
যাব তুমি একটু দুলাভাইকে বলে দিও
পড়াটা কাল দিব।
-তুমি যেতে দিলে কেন?
-বাহ আমার একটা মাত্র ভাই এতটুকু
আব্দার করেছে আর আমি রাখবনা।
-তুমি যেমন ফাজিল তোমার
ভাইটাকেও তেমন ফাজিল তৈরি করছ।
-আমি অনেক লক্ষী মেয়ে।
-এরকম চললে আমি সত্যিই নোটিশ করব
নাহলে আর কখনও পড়াতে আসবনা।
-সেটা আপনি কখনই পারবেন না আমি
জানি।
-পারি কি না দেখা যাবে।
-আমিও বলে দিব আমার শ্বশুর আব্বাকে।
-কিসের শ্বশুর আব্বা আর কি বলবে শুনি?
-বলব আপনি আমাকে সারাদিন বকা
দেন।
-ন্যাকা খুকি।যাও পড়তে বস।
-পড়া শেষ।
-কখন পড়লে?
-এইতো একটু আগে।
-তুমি তো টিভি দেখছিলে।
-মোটেই না আমি পড়ছিলাম।
-উফফ তোমরা দুই ভাই বোন মিলে
আমাকে পাগল করে ছাড়বে দেখছি।
-কি যে বলেন আপনি পাগল হবেন কেন?
-এই তুমি এত ন্যাকা কেন আর আমাকে
বিয়ে করতে রাজিই বা হলে কেন?
-বলবনা লজ্জা করে।
-থাক তোমার লজ্জা নিয়ে আমি
গেলাম।
-কোথায় যাবেন?
-বাসায় যাব।
-এখন তো যেতে পারবেন না।
-কেন?
-আপনার শাশুড়ি আম্মা থুক্কু আমার মা
আপনার জন্য স্পেশাল কিছু রান্না
করেছে খেয়ে যেতে হবে।
-দেখ মায়া ফাজলামি সবসময় ভাল
লাগেনা।
-বিশ্বাস হচ্ছে না তো দাড়ান মা কে
ডাকছি।
-এই মেয়ে চুপ করবে তুমি।আমি বের হব
এখন।
-এই দাড়ান....
কোনভাবে দজ্জাল মেয়েটার হাত
থেকে রেহাই পেয়ে পরানটা হাতের
মুঠোয় নিয়ে পা টিপে টিপে বের
হচ্ছি।পিছন থেকে ডাক পড়ল....
-এই যে বাবা শুভ্র কোথায় যাচ্ছ?
(মায়ার আম্মু)
-জ্বি আন্টি বাসায় যাব তো তাই বের
হচ্ছিলাম।
-একটু পরে খেয়ে তারপর যেও।
-জ্বি মানে আন্টি....
-লজ্জা পেতে হবেনা বাবা যাও
গিয়ে বস মায়ার সাথে গল্প কর।
.
একেই বলে কপাল।বিয়ের আগে জামাই
আদর খাইতেছি যেন তেন ব্যাপার না।
ধুর নিজের কপালে নিজেরই থাপড়া
মারতে মন চায়।কেন যে আব্বু এরকম করে
ফাসাল আমাকে।এই ফেমেলিতে
আমি বিয়ে করলে সোজা পাবনায়
টিকিট কাটতে হবে।তারপর মায়া
নামক এই সেচ্ছাচারী বিরক্তির
ট্যাবলেট মানে একেবারে অসহ্য সবসময়
ন্যাকা ন্যাকা ভাব যেন ভাঁজা
মাছটা উল্টে খেতে পারেনা এমন
ভাব।দেখতে নরম হলে কি হবে সময় হলে
রাক্ষসীর মত। এলাকায় যত বান্ধবী
আছে ছড়িয়ে দিয়েছে আমি ওর
জামাই আমাকে যেন সালাম দিয়ে
চলে।রাস্তাঘাটে বেরোতেই ভয়
লাগে।এই যা যে ভয়টাই পাচ্ছিলাম
দস্যু রানী হাজির...এতটুকুও শান্তি
দিবেনা আমায়....
-এই শুনছেন?
-কি হল তোমার আবার।
-আপনি না বললোন বাসায় যাবেন তো
গেলেন না কেন?
-কি করে যাব একটু পর তো আমার বিয়ে
তাই বিয়েটা করেই যাব।(বিরক্তির
সুরে বললাম)
-এ মা সত্যি! এই দাড়ান শাড়ি পরতে
হবে তো।
-এই মেয়ে এই শাড়ি পরবে কেন তুমি
হ্যা।
-বাহ আপনিই তো বললেন একটু পর আমার
বিয়ে।
-এই তোমার কি একটুও লজ্জা নেই?
-এমন করে বলছেন কেন?
-চুপ।যাও নিজের কাজে যাও।
-নিজের কাজেই তো এসেছি।
-মানে?
-আমার চুলগুলো বেধে দিবেন প্লিজ।
-কি বললে তুমি।
-দেন না একটু বেধে বিয়ের পর তো
দিতেই হবে।
-দাড়াও দেখাচ্ছি মজা।
-কচু আপনি একটা পঁচা।
-জিভ বের করে ভ্যাংচি কেটে চলে
গেল।
.
একেবারে নির্লজ্জ একটা মেয়ে।
বিয়ে বিয়ে করে সারাক্ষন পাগল।
একটুও মুখে বাধেনা।কিন্তু কি আশ্চর্য
যে আমি প্রেম নামক শব্দটা
এ্যালার্জীবোধ করতাম সেই আমি কখন
যে এই পাগলী মেয়েটার পাগলামীর
প্রেমে পড়ে গেছি নিজেই জানিনা।
সত্যি বলতে কি আমারও খুব ভাললাগে
ওর চাল চলন কথা বার্তা সবকিছু
অনেকটা আদুরে।কিন্তু সব কিছুর একটা
সীমারেখা থাকা উচিৎ।সেটা ওই
পাগলীটার মাথায় নেই।আছে কেবল
বিয়ের পোকা।বিয়ে বিয়ে করে
লেখাপড়ার বারোটা বাজিয়েছে।
অবশ্য যত শলা পরামর্শ ফিস ফিস কথা সব
আমার পাকা বোনের সাথে হয়।ননদ
ভাবী মিলে সারাক্ষন কি সব ফিস
ফিস আর হাসাহাসি করে।আমি মাঝে
মাঝে আড়চোখে তাকিয়ে অবাক হয়ে
যাই মেয়েটার চোখগুলো যেন ছলছলে
কথা বলতে চায়। আর ওর
হাসিটা,হাসিটা আমার ভীষন প্রিয়।
আমি ওকে দেখি অনুভব করি চোখের
তৃষ্ণা মিটাতেই তো ছুটে আসি।
কিছুক্ষন না দেখলে এদিক ওদিক উঁকি
দেই কোথায় পাগলীটা।
.
কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর পেট
ভোজনটা হল।কিন্তু ফাজিল মেয়েটার
জন্য খাওয়ায় যায়না।আমার থালায়
ভাত কম কেন তরকারী কম কেন ইত্যাদি
ইত্যাদি।লজ্জায় ফেলে দেয় যখন তখন।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাসায়
ফিরলাম।
রাতে শুয়ে আছি মায়া কল
দিয়েছে....
-হ্যালো শুনছেন?(মায়া)
-এতরাতে কল দিয়েছ কেন?
-আপনার কথা মনে পড়ছিল তাই।
-কিইই
-না মানে আপনি ঘুমিয়েছেন কি না
তাই দেখছিলাম।
-আমি ঘুমাব তুমিও ঘুমাও।
-একবার বলেন!
-কি?
-শুভরাত্রি।
-শুভরাত্রি।
টুট টুট টুট।
.
কিছুদিন পর.....
আমার ভার্সিটির এক বান্ধবী নিশা
একটা নতুন ফোন নিবে তো আমাকে
বলল সাথে যেতে।যথারীতি আমরা
মার্কেট কমপ্লেক্স এ ঢুকে মোবাইলের
দোকানে মোবাইল দেখছি।হঠাৎ করে
পিছন থেকে কে একজন দুলাভাই বলে
ডাক দিল।পিছনে ফিরে দেখি মায়া
আর মিশু আসছে।মিশু বলছে দেখেছিস
আপু আমি বলেছিলাম না দুলাভাই
হবে।হ্যা এখন চুপ থাক।
-এই যে মিশু এখানে কেন তোমরা?
-তার আগে বলেন আপনি এখানে কেন?
-এই হল ফাজিলের স্বভাব মুখে মুখে তর্ক
করে।
-এই শুভ্র কি হল এদিকে আয়।(নিশা ডাক
দিল)
-হ্যা দাড়া একটু।
-উনি কে দুলাভাই?
-আমার এক বান্ধবী।ফোন কিনবে বলে
আমাকে নিয়ে আসল।
-চল মিশু উনি এখন অনেক বিজি বিরক্ত
করিস না।
-আরে বিজি হব কেন?তোমরা কেন
এসেছ বললে না তো।
-নাচতে এসেছিলাম বলেই মিশুর হাত
ধরে টানতে টানতে বাইরে চলে গেল।
আমি যে কিছু বলব সে সুযোগটাও
দিলনা।কিছুক্ষন বাদে বাসায় ফিরে
রেষ্ট নিলাম।বিকেল হতেই ওদের
বাসায় রওনা দিলাম পড়ানোর জন্য।
.
ভিতরে ঢুকেই দেখি মনমরা ভাব।
মিশুটা মাথা নিচু করে পড়ছে।
মায়াকেও আশেপাশে দেখছি না।
মিশু যেন আজকে পড়াতে একটু বেশি
মনোযোগ দিয়েছে।কৌতুহলবশত মিশুকে
জিজ্ঞাসা করে বসলাম তোমার আপু
কোথায়?বলল রুমে দরজা লাগিয়ে বসে
আছে।আমি আর বেশি কিছু বলিনি।
বেশকিছুদিন হল দুই ভাই বোনের মধ্যে
একটা বিশাল পরিবর্তন এসেছে।মিশু আর
আগের মত দুষ্টুমি করেনা।মায়া প্রয়োজন
ছাড়া আমার সাথে কথা বলেনা।
আজকে ঠিক করেছি এই রহস্যের উদঘাটন
করব।প্রথমে মিশুকে দিয়েই শুরু করলাম।
জিজ্ঞাসা করলাম তুমি আমাকে আর
দুলাভাই ডাক না কেন?বলল আপু মানা
করেছে।এরপর আসলাম মায়ার কাছে।
রুমেই বসে আছে কি জানি কি একটা
উপন্যাস পড়ছে....
-হু হু হুমমম আসতে পারি?(আমি)
-জ্বি আসেন।(কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে
বলল)
-তুমি ঠিক আছ তো?
-হ্যা কেন?
-নাহ আগের মত আর কথা বলনা কেন
আমার সাথে।
-বলি তো।
-কিছু লুকিয়ে যাচ্ছ?
-আশ্চর্য লুকানোর কি আছে কথা যতটুকু
বলার প্রয়োজন ততটুকু বলি।
-নাহ বলনা।কি হয়েছে তোমার মায়া
আমাকে বল?
-আমি ঠিক আছি।আপনি এখন আসতে
পারেন আমার হাতে অনেক কাজ।
-এতদিন তো কোন কাজ ছিল না আজ
কি এমন হঠাৎ কাজ বাধল তোমার?
-সবকিছুর কৈফিয়ত কি আপনাকে দিতে
হবে নাকি?
-হ্যা দিতে হবে।
-আশ্চর্য কে আপনি?
-আমি কে তুমি জাননা?
-নাহ স্যরি।
-মায়া তুমি তো এমন ছিলেনা হঠাৎ
কি হল তোমার?
-দেখেন আমি বিরক্তবোধ করছি আপনি
কেন বুঝতে চাইছেন না?
-মায়া প্লিজ বল আমাকে কেন তুমি
আপসেট।
-হন হন করে বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।
.
ইদানিং এই এড়িয়ে যাওয়ার
ব্যাপারটা বেশ লক্ষ্য করছি মায়ার
ভিতর।সবকিছুতে কেমন এড়িয়ে চলে
আমাকে।আজ মিশুর জন্মদিন ছিল।আমি
এখটা গিফ্ট নিয়ে গিয়েছিলাম।
মায়া শাড়ি পরেছিল চোখে কাজল
দিয়েছিল। আমি বারবার দেখেছি
ওকে কথা বলার সুযোগ দেই।একবারও
আড়চোখে তাকাইনি আমার দিকে।
হঠাৎ করে প্রিয় মানুষের বদলে যাওয়া
তার কাছ থেকে এতটা অবহেলা সহ্য
করা যায়না।তবুও আমি আশায় থাকি।
হঠাৎ করে বদলে যাওয়ার কারনটা আজও
অজানা।না খেয়েই চলে এসেছি আমি
মায়া জানে তবুও একবারের জন্যেও
আমাকে বলেনি খেয়ে যেতে।বাসায়
এসে মন খারাপ নিয়ে বসে আছি।
একটু পর বৃষ্টি(আমার বোন)আসল ওদের
বাসা থেকে। ওকে নাকি মায়া বলে
দিয়েছে আমাকে বিয়ে করবেনা
যাকে নিয়ে শপিং মল ঘুরি তাকে
যেন বিয়ে করি।আচ্ছা আমি কাকে
নিয়ে শপিং মল ঘুরি?এবার বুঝেছি
সেদিন নিশার সাথে দেখে রেগে
বের হয়ে আসার কারন হচ্ছে এটা।
আমাকে সন্দেহ করেছে।যার ফলস্বরুপ
আমাকে এড়িয়ে চলছে।
.
পরেরদিন বিকেেলে.....
ওদের বাসায় গিয়ে মিশুকে পড়া
দিয়ে মায়ার রুমে ঢুকলাম।বসে বসে
নেইলপলিশ লাগাচ্ছে নখে।আমাকে
দেখে চুপ হয়ে গেল।
-কারও রুমে প্রবেশ করার আগে নক করতে
হয় জানেন তো।
-জানি তবে সেটা আপনজনদের
ক্ষেত্রে না।
-আমরা কোন রিলেটিভ নই আশা করি।
-চুপ থাক একদম।কি কারনে ভুল বুঝলে
আমায় বল?
-আশ্চর্য আমি আপনাকে কেন ভুল বুঝতে
যাব? কে হন আপনি আমার?
-আমি তোমার সব।
-আশ্চর্য মগের মুল্লুক নাকি।
-হ্যা।এই শোন যাকে নিয়ে তুমি ভুল
বুঝলে সে আমার বান্ধবী এর বেশি
কিছু না।সবসময় চোখের দেখা
সত্যিটাও ভালভাবে যাচাই না করে
সিদ্ধান্ত নিলে পরে পস্তাতে হয়।
-আশ্চর্য কে আপনার বান্ধবী কে
জানতে চেয়েছে।
-কেউ জানতে চাইনি তুমি ভুল বুঝেছ
তাই বললাম।
-আশ্চর্য কতবার বলব আমি কেন ভুল বুঝব?
-প্লিজ মায়া বোঝার চেষ্টা কর একটু
বিশ্বাস কর।
-দেখেন সত্যি বলতে কি আপনাকে
আমার একদম সহ্য হচ্ছেনা প্লিজ আসতে
পারেন।
-ওহ আচ্ছা চলে যাব কিন্তু তোমাকে
কিছু বলে যাব শুনবে?
-তাড়াতাড়ি বলে প্লিজ চলে যান।
-আমি কখন যে তোমার পাগলামীর
প্রেমে পড়ে গেছি আমি বুঝতে
পারিনি।একটু একটু করে যখন আমাদের
ভালবাসাটা পূর্নতা পাচ্ছে ঠিক তখনই
তুমি অকারনে আমাকে ভুল বুঝলে।দূরে
ঠেলে দিলে।কিন্তু বিশ্বাস কর এতে
আমার এতটুকুও দুঃখ নেই।কারন আমি
চোখ বন্ধ করলেই তোমার দুষ্টুমিগুলো
দেখতে পাই দেখদে পাই তোমার
হাসিমুখটা।যার প্রেমে বারবার পড়ি
আমি।সত্যি বলছি মায়া নিজের
অজান্তেই তোমাকে ভালবেসে
ফেলেছি।জানিনা কখনও বলা হবে
কিনা ভালবাসি তোমাকে অনেক
বেশি ভালবাসি।
-আর কিছু?
-ভাল থেক।
-ওকে।
.
আজকে খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে খুব ইচ্ছে
করছে।আচ্ছা প্রিয় মানুষগুলো কেন
অসময়ে হারিয়ে যায়।আমি তো কোন
দোষ করিনি যার শাস্তি আমি পাব।
আচ্ছা মায়া কি সত্যিই ভুলে গেছে
আমাকে।রাতের আকাশটাকে
জিজ্ঞাসা করলাম কোন উত্তর দেয়নি
তখন....।
.
দুইদিন পর....
মায়াদের বাসায় যাইনা আর।যাওয়ার
প্রয়োজনই নেই আর।ভালই হল সবার
কপালে কি আর সুখ সহ্য হয়।
বিকেলে বাইরে থেকে এসে ক্লান্ত।
দুপুরে খাওয়া হয় নি।রুমে ঢুকে শার্টটা
খুলে বসেছি।প্রচন্ড গরম।আমি কিন্তু
বসেছি আমার খাটে।এমনিতেই আমার
খাটে একটা বালিশ কিন্তু লম্বা কি
একটা যেন আমার পাশেই রাখা।পিঠে
যেখানে স্পর্শ পাচ্ছি ভীষন নরম।
একপর্যায়ে কৌতুহলবশত লাফিয়ে
নামলাম খাট থেকে।অমনি খিল খিল
করে চাদর মুড়ি দেওয়া ছিল ভিতর
থেকে বেরিয়ে আসল পেত্নি।নাহ
পেত্নি না মায়া।কতদিন পর সেই
হাসিটা দেখলাম।যদিও গম্ভীর আছি
এখনও....
-কি ব্যাপার তুমি এখানে কেন?(আমি)
-কেন আসতে পারিনা বুঝি।
-নাহ পারনা।
-কিন্তু আমি তো আসব।
-মানে?
-আমি আপনার হবু স্ত্রী আপনার ঘরই তো
আমার ঘর।
-হাউ ফানি! হু আর ইউ?
-আপনার বউ চেনতে পারছেন না সেই
পাগলী আমি যার প্রেমে পড়েছিলেন
আপনি।
-কি বলছ এসব?(না বোঝার ভান করলাম)
-আমাকে কি মাফ করা যায়না?(হাত
ধরে শান্ত গলায় বলল)
-প্লিজ হাত ছাড় এবং এক্ষুনি আমার ঘর
থেকে বের হয়ে যাও।
-না ছাড়বনা বেরও হবনা কারন আমার
সমঅধিকার আছে।
-মায়া বের হতে বলেছি তোমাকে।
-হব না কি করবেন?মারবেন নাকি?
-ধুর।(বের হয়ে আসতে চাইলাম)
-আমি দুঃখিত এবারের মত মাফ করে
দেন প্লিজ আর কখনও এমন হবেনা।
মনটা ভীষন অস্থির।অজানা এক
অভিমান এসে ভর করেছে আমার মনে।
জোর করে ওয়াশ রুমে ঢুকলাম।ভীষন কষ্ট
হচ্ছে এতদিন পর মায়াকে দেখলাম তবু
অভিমানের কারনে স্বাভাবিক হতে
পারছিনা।ওয়াশ রুম থেকে বেরোলাম
সাথে সাথে মায়া হাজির...
-আসেন খাবার খাবেন।
-নাহ খাবনা।
-দুপুরে খান নাই খেতে তো হবে।(একটা
টিফিন বক্স খুলল)
-কি এটা?
-আমি নিজের হাতে রান্না করে
খাবার এনেছি।
-তো?
-আপনাকে খেতে হবে।
-হা হা হা।প্লিজ মায়া তুমি এক্ষুনি
বেরিয়ে যাও আমার বাসা থেকে আর
সহ্য করতে পারছিনা।
-খাবারটা খেয়ে নিন চলে যাব সত্যি।
-কখনও না।
-প্লিজ।(চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।)
-খাবনা।
-প্লিজ।
-চুপ করে আছি।
-প্লিজ একবার হা করেন।
-নিজের অজান্তেই মুখটা হা হয়ে
গেল।মায়া খাবারটা আমার মুখে তুলে
দিল নিজের হাতে।
দুজনের চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।এটা
খুশির অস্রু।আনন্দবার্তা।আমি ও চোখের
ভাষা পড়ে ফেলেছি অভিমানী
মেয়েটাকে যে বড্ড বেশি
ভালবাসি।ইসসস কেমন করে কাঁদছে
বাচ্চাদের মত।চোখের পানিটা
মুছিয়ে দেওয়া দরকার.....।।।।
.

Back to posts
This post has no comments - be the first one!

UNDER MAINTENANCE
নিজের নামে সাইট বানাতে এখানে ক্লিক করুন
★ Home ★ User Rights
★ About Us ★ Privacy Policy
★ Contact Us ★ Faq
★ Terms ★ Copyright
Go To Top


Insane