![]() | ![]() |
![]() | ![]() |
বাসর রাতে বউয়ের থেকে এমন কথা
আশা করেনি আলভি। আসলে অালভিও
বিয়েটা করতে চায়নি। কিন্তু
পরিবারের থেকে এক প্রকার চাপে
বিয়েটা করতে হল তাকে।
।।
।।
"মা আমি বিয়ে করবোনা "
" কেন করবি না করতে হবেই তোকে "
" না, তোমরা আমাকে কেন মেরে
ফেলতে চাইছো? "
" কি সব অলুক্ষনে কথা বলছিস? "
" ঠিকই তো বিয়ে আর মরার মধ্যে
পার্থক্য কি? "
" কিছু শুনতে চাইনা "
" আমি বিয়ে করবোনা মা, এর থেকে
মরে যাওয়া ভালো "
।।
।।
অনেক চেষ্টা করেও বিয়েটা
থামাতে পারলো নাহ আলভি। যে
মেয়ের সাথে বিয়ে হবে তাকে
অনেক কথা বলেছে যে তার
গার্লফ্রেন্ড আছে , আলভি নেশা করে,
আরো অনেক কিছু। কিন্তু মেয়েটা
তেমন কিছুই করলো না। বরং বেহায়ার
মত বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেল। তাই
একটু রেগে আছে আলভি। অতঃপর বিয়ে
টা হয়ে গেল। তাই আর রাগ করে
থাকতে পারলো। না বুকের মাঝে
অনেক গুলো স্বপ্ন রয়েছে তার বউ কে
নিয়ে।
।।
।।
জীবনে কোনো মেয়েকে ছুয়ে পর্যন্ত
দেখেনি, কোনো মেয়েকে
ভালবাসি বলেনি, এমন কি মেয়েদের
সাথে মেশেও নি। কারন সব ভালবাসা
বউয়ের জন্য রেখেছে সে। যা হবে সব
বিয়ের পর। নিজের প্রতিদিনের
ডাইরি টার মধ্যে নিজের হবু বউ কে
নিয়ে অনেক কিছু লেখা। কারন সে
তো কখনও প্রেম করেনি, তাই তার
ভালবাসার অনুভুতি গুলো ডাইরিতে
লেখা। যা তার বউ কে নিয়ে জীবন
টা উপভোগ করবে।
।।
।।
অতঃপর বাসর রাত। খুব ভয়ে ভয়ে প্রবেশ
করলো আলভি। এই মুহুর্তটা কেমন যেন
ভয়ংকর লাগছে তার। বুকটা কেমন যেন
করছে। যদিও বিয়ের কিছুদিন আগে
থেকেই হবু বউয়ের সাথে কথা বলেছিল
বন্ধুর মতই। আর মেয়েটাও বন্ধুর মতই একদম
ফ্রী হয়ে গিয়েছিল আলভির সাথে।
।।
।।
প্রতিটা দম্পতির মতই তাদের বাসর রাত
টি কাটলো খুব আনন্দের মাঝেই।
কিন্তু...
।।
" আদিবা তোমাকে একটা প্রশ্ন করি? "
" কি প্রশ্ন? "
" বলো সঠিক উত্তর দিবে? "
" হ্যা তুমি বলেই দেখে "
" ইয়ে না মানে "
" হুম বলো? "
" তুমি "
" হুম? "
" বিয়ের আগে কারো সাথে তোমার
ফিজিকাল রিলেশান ছিলো? "
" এসব কি বলছো আলভি? "
" না থাক, আমি তোমাকে বিশ্বাস
করি "
।।
।।
এবার ভাবলো আলভি কে সত্যি
কথাটা বলা উচিত। তাই নিজের
চোখটা বন্ধ করলো। কারন আলভি
তাকে সন্দেহ করছে, আবার বিশ্বাসও
করে তাই সত্যি টাই বলে দেয়া উচিত।
।।
।।
" আলভি তোমাকে সত্যি টা বললে,
আমাকে ভুল বুঝবে না বলো? "
" ভুল বুঝবো কেন? "
" না কিছুনা, মানে "
" তোমার সমস্যা হলে বলোনা "
" একটা ছেলে আমাকে খুব ভালবাসত।
আমিও তাকে খুব ভালবাসতাম। কিন্তু
মাঝে মাঝে সে আমাকে এড়িয়ে
চলতো। যেটা আমার খুব খারাপ লাগত।
একদিন সে আমাকে তার বাড়িতে
ডাকে, আমি শুধু আমার ভালবাসা
রক্ষার্থে গিয়েছিলাম। আর সে আমার
সাথে... "
।।
।।
আলভি চুপ হয়ে কথা গুলো শুনলো।
নিজেকে কেন যেন ভারী মনে হচ্ছে
তার। এমন সময় আদিবা তার হাত দুটো
ধরে বলল...
।।
।।
" বিশ্বাস করো আমি ভুল করেছি, ওর
কথা শোনা উচিত হয়নি, কারন সে
আমাকে শুধুই ব্যবহার করেছিল, আরো
অনেক বার এমন হয়েছিল, তারপর
আমাকে ছেড়েই অন্য কারো হয়ে
গিয়েছিল সে "
।।
কোনো কথা বলল না আলভি। তার মনে
পড়ে যাচ্ছে তার বন্ধুদের কথা।
কলেজে থাকতে মেয়েরা তার সাথে
মিশতে চাইত কিন্তু সে এড়িয়ে চলত।
তার অনেক বন্ধুরাই ফিজিকাল
রিলেশানে জড়িত ছিল। তাই যখন
আলভি কে বলত, তখনি সে বলত আমার
সব কিছু আমার বউয়ের জন্য, অামার
ভালবাসা, আমার ফিলিংস আমার
পৃথিবী আমার সব, আর আমি যেমন
কোনো মেয়েন ক্ষতি করিনি, আমার
বউও আমার মতই হবে।
।।
।।
হটাৎ আদিবার ডাকে নিজের
অবস্থানে ফিরে এলো সে।
।
" বাবু আমাকে ক্ষমা করে দাও "
" হাহাহা ধ্যাত আমি কিছু মনে
করিনি"
" সত্যি বাবু? তুমি অভিমান করে বলছো
না তো? "
" ধ্যাত বোকা মেয়ে কিছু হয়নি বললাম
তো। তুমি ঘুমাও "
" তুমি ঘুমাবেনা? "
" পড়ে ঘুমাবো আমি "
" আচ্ছা বাবু আমি তোমার বুকে ঘুমাই?"
" কেন? "
" ইচ্ছে করছে তাই "
" আচ্ছা "
।।
।।
রাত প্রায়ই ৪ টা বাজে। আদিবা
ঘুমিয়ে গেছে। তাকে বুক থেকে
নামিয়ে, পাশে ভাল করে শুইয়ে
দিলো। আলভি উঠে, আলমারী থেকে
তার লেখা ডাইরি গুলো বের করলো।
এবং বিছানায় আলভি যেখানে শুয়ে
ছিল সেখানে রাখলো। ঠিক আদিবার
পাশে। অনেক সময় ধরে আদিবার দিকে
ভালবাসার নজরে তাকিয়ে, একটা
মুচকি হাসি দিয়ে আদিবার কপালে
একটা কিস করে। নিজের রুম থেকে বের
হয়ে। একে একে বাবা মা এবং বড়
ভাইয়ার রুমে গিয়ে একটু করে
তাকিয়ে, ছাদের দিকে সিড়ি বেয়ে
উঠতে থাকলো আলভি।
।।
।।
একটু পরেই আজান দিবে। যা করার এখনই
করতে হবে। দুর আকাশে চাঁদটির দিকে
তাকিয়ে, নিচে ঝাপিয়ে পড়লো সে।
মৃত্যুর শেষ মুহুর্তেও সে ওই চাঁদটির দিকে
তাকিয়ে ছিল।
।।
সকালে ঘুম থেকে উঠে অাদিবা
দেখলো তার পাশে আলভি নেই। কেমন
যেন চিৎকার, কান্নার শব্দ ভেসে
আসতেছে। সে ভাবলো হয়ত কিছুই নয়।
আলভি হয়ত বন্ধুদের সাথে আড্ডা
দিচ্ছে, নিশ্চয়ই বন্ধুদের সাথে বাসর
রাতে মুহুর্ত শেয়ার করতেছে।
।।
ফ্রেস হয়ে ঘরে সবাইকে খুজতে
লাগলো। কেউ রুমে নেই। একটু পর আবার
সেই কান্নার অাওয়াজ বারান্দা
দিয়ে নিজে তাকিয়ে সে যা
দেখলো তা সে দেখার জন্য প্রস্তত
ছিল না। কোনো রকম সিড়ি বেয়ে
হোচট খেয়ে খেয়ে নিচে নামলো।
আলভি কে এভাবে রক্তাক্ত অবস্থায়
দেখে এক প্রকার অজ্ঞান হয়েই গেল।
আজ অনেকটা দিন খানিক পর সম্পূর্ন রুপে
জ্ঞান ফিরলো আদিবার। সুস্থ হলে তার
শশুড় শাশুড়ি তাকে নিয়ে আসলো।
।।
।।
সেই ঘরটির ভেতর যেতে কেন যেন
আলভির উপস্থিতি উপলব্ধি করলো সে।
কিন্তু আলভি কোথাও নেই। বিছানার
ঠিক পাশে আলভির খুব বড় করে ছবিটার
দিকে কান্না করতে লাগলো আদিবা।
এমন সময় বিছানার সেই ডাইরি গুলো
হাতে নিলো।
।।
।।
--
তারিখঃ ১৪/২/২০১৫
.
আজ আমার এক বন্ধু বলল, সে নাকি তার
গার্লফ্রেন্ডদের কে ব্যবহার করে।
আমাকেও খুব খারাপ খারাপ বুদ্ধি
দিলো, কিন্তু আমি ওর মত হতে পারবো
না, কারন আমি যেমন হবো আমার বউও
তেমন হবে।
।।
(নিজের চোখের জল টা মুছে, অন্য
পৃষ্ঠায় চোখ দিলো আদিবা)...
।।
--
তারিখঃ ২-৩-২০১৫
.
কাল আমার বিয়ে অনেক চেষ্টা করেও
আটকাতে পারালাম না। অবশ্য
মেয়েটা আই মিন আমার বউটা খুব
ভালো। বন্ধুরা যখন বলত ওদের
গার্লফ্রেন্ডের হাত ধরে হেটেছে,
কিস করছে, একসাথে রিক্সায় ঘুরেছে,
আরো খুব মজা করছে তখন আমারও ইচ্ছে
হত। কিন্তু ভাবতাম সব হবে বিয়ের পর
বউয়ের সাথে। কারন ওদের গার্লফ্রেন্ড
গুলো ওদের ছাড়বে, কিন্তু আমার বউ
তো আমারই, সে আমাকে কখনও ছেড়ে
যাবেনা। তাই যা প্রেম করবো সব
বউয়ের সাথে।
।।
।।
আরো অনেক লেখা আলভির স্বপ্ন গুলো
নিয়ে। যা পড়তে পড়তে আদিবার
চোখে জল চলে আসলো, এবং কান্না
করতে করতে বলল...
.
" তুমি কেন এমন করলে আলভি, আমি
তোমার স্বপ্ন গুলো কে ভেঙ্গে
দিলাম, মরে যাবার তো আমার কথা
তাহলে তুমি কেন? কেন তুমি? নাহ তুমি
যদি পারো তাহলে আমিও পারবো "
।।
।।
সন্ধ্যার সময় ছাদে গিয়ে, অঝোরে
কাদতে লাগলো আদিবা। ঠিক যখনই
ছাদের রেলিং পা দিয়ে উঠতে
গেলো। তখন কেউ তার হাত চেপে
ধরলো। তাই সে আর উঠতে পারলো না।
।।
।।
"একি করতে যাচ্ছো তুমি? " (আলভির
আত্বা)
" আমি তোমার কাছে যাবো বাবু "
" নাহ তা হয়না "
" কেন তুমি পারলে আমি পারিনা
কেন?"
" কারন আমি তোমার মাঝে বাচতে
চাই "
" নাহ আমি যাবোই তোমার কাছে "
" তুমি কি আমাকে দুরে সরিয়ে দিতে
চাচ্ছো আদিবা? "
" মানে কি বলছো বাবু? "
" আমি চাই তুমি বেচে থাকো,আমি
তোমার মাঝে বেচে থাকতে চাই,
তোমার মাঝেই নিজেকে রাখতে
চাই আদিবা, তাই তুমি প্লিজ এমন
করোনা "
" আমি তোমাকে খুব ভালবাসি আলভি,
খুব ভালবাসি "
" এটাই তো, তুমি আমাকে খুব
ভালবাসো, তাই তো বলছি তুমি বেচে
থাকো, কারন তোমার মাঝেই তো
আমি বেচে থাকতে চাই। যাও ঘরে
ফিরে যাও আমি আবার আসবো "
" সত্যি তুমি আসবে? "
" সত্যি আসবো তুমি আমার অপেক্ষা
করো যাও "
।।
।।
আদিবা আলভির কথা গুলো মেনে
নিলো, সেদিনের পর থেকে কেমন
যেন পাগলী হয়ে গেলো আদিবা।
নিজেই নিজের সাথে কথা বলে,
আবার বলে "ওই তো আলভি, আমি
আসছি, তুমি দাড়াও" কিন্তু কাছে
যেতেই হারিয়ে ফেলে আলভি কে।
*
*
(বিঃদ্রঃ গল্পের এমন পরিনতির জন্য, শুধু
আধুনিক নষ্টামী দ্বায়ী। এক্ষেত্রে
মেয়েদের বোঝা উচিত ৪-৫ বছর
ভালবাসার কাছে নিজেকে
বিকিয়ে নয়, বরং যার সাথে সারাটা
জীবন কাটাবে শত শত বছর, তার কাছেই
নিজেকে বিকিয়ে দিতে হয়।
।
কিন্তু নাহ বর্তমানে তো ১০ দিনের
ভালবাসাতে ই এমন হয়, একটা ছেলে
যদি ১০ দিনেই সব পেয়ে যায়, তাহলে
১০ বছর তো দুরে থাক ১০ মিনিট ও
কাটাবে কেন? এক্ষেত্রে শুধু ছেলের
দোষ দিবেন নাহ? আপনি মেয়েই বা
কেমন? - আপনারা বোঝেন না? আর হ্যা
কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য বলিনি, আমার
কথায় কেউ কষ্ট পেলে ছোট মনে করে
ক্ষমা করে দিবেন )
~
~